তথ্য

অনলাইনে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন যাচাই 2023

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অনেক মানুষই বিয়ের করার সময় রেজিস্টার করে না। অনেকেই বিয়ের রেজিস্ট্রেশনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে থাকে কিন্তু আপনাদের সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের গুরুত্ব অপরিসীম। যদি আপনি বিয়ে করার পর তার রেজিস্ট্রেশন না করে তাহলে আপনার বিয়ে করার কোন দলিলে রইলো না। সে ক্ষেত্রে আপনার বিবাহ যদি কোন রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়  রেজিস্টার না থাকলে আপনি কোন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন না সচরাচর ভাবে। নতুন বিবাহ রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে আপনার বিবাহের  প্রামাণ্য দলিল। প্রেক্ষিতে ১৯৭৪ সালে বিয়ে নিবন্ধন ও তালাক সম্পর্কে একটি নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। আইন অনুযায়ী আপনাকে অবশ্যই বিয়ে করার পর তা রেজিস্টার করতে হবে।

যিনি বিয়ে করান থাকে বলা হয় নিকাহ রেজিস্টার। যদি আপনি আপনার বিয়ের দিন এই নিকা রেজিস্টার এর মাধ্যমে আপনার বিবাহ সম্পন্ন করেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই সেই দিনাই তৎক্ষণাৎ ভাবে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করতে হবে।যদি আপনি কোন মাওলানা বা হুজুরের মাধ্যমে বিয়ের সম্পন্ন কাজ করে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই মনে করে বিয়ের পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে একজন নিকার রেজিস্টার এর কাছে থেকে আপনার বিবাহর নিবন্ধন করে নিতে হবে। মনে রাখবেন বিবাহ রেজিস্ট্রেশন কেবলমাত্র স্বামীর দায়িত্ব। এক্ষেত্রে কোনভাবেই স্ত্রীর উপর কোন রূপ দোষারোপ করা যাবে না। কেননা আইন অনুযায়ী স্বামীকে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন এর কাজ সম্পূর্ণ করতে হয় যদি স্বামী অবহেলা জনিত বা যে কোনো কারণে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন না করে তাহলে তাকে আইন অনুযায়ী দুই বছরের বীরাশ্রম কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়ে থাকে।

বিবাহ রেজিস্ট্রেশন এর নিয়ম ও সুযোগ সুবিধা

বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করা সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে যেদিন বিবাহ সম্পন্ন হবে রেজিস্ট্রেশনের সম্পূর্ণ করতে হবে সেই দিনই। ফলে পরবর্তীতে আপনার আর কোন রকম বিবাহ নিয়ে ঝামেলা হবে না। কিন্তু যদি আপনি কোন সমস্যা বা ঝামেলায় পড়েন তাহলে আপনাকে বিয়ে করার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আপনার বিবাহ রেজিস্ট্রেশন অবশ্যই সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু এটি পরিসংখ্যান হতে জানা গেছে যে বিয়ে করার পর অনেক মানুষ হয় বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করতে ভুলে যায়। পরবর্তীতে অনেক মানুষ হয় আবার কাজী অফিসে গিয়ে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করা ঝামেলা মনে করে। যেদিন বিবাহ হবে সেদিন ওই রেজিস্ট্রেশন করা উত্তম কাজ বলে মনে করা হয়। সব সময় মনে রাখবেন আমরা বিয়ে করার একমাত্র প্রমাণ বা দলিল হচ্ছে এই বিবাহ রেজিস্ট্রেশন।

যদি কোন কারণে স্বামী স্ত্রীর বা বিভেদ বা কোনরকম সন্দেহের সৃষ্টি হয় তাহলে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন সনদের কোন বিকল্প নেই। ধরেন আপনারা কোন জায়গায় ঘুমানোর করতে গেলেন বা কোন হোটেলে থাকার সময় আপনাকে এই বিবাহ রেজিস্ট্রেশন অনেক কাজে লাগবে। অনেক বড় বড় হোটেলে বিবাহ ছাড়া সেখানে কাপলদের  এক রুমে থাকতে দেওয়া হয় না।এছাড়াও যদি স্বামী-স্ত্রীর উপর সন্তান ভরণ পোষণের দায়িত্ব ছেড়ে দেয় অথবা স্ত্রীর সাথে প্রতারণা করে সেখানে আপনি এ বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে বাকি সব কিছু ঠিকঠাক ভাবে পাওয়ার জন্য কাজে লাগবে।  যদি স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে তোমা প্রতারণার মামলা করতে চায় তাহলে আদালতই প্রথমেই তার কাছে বিয়ের প্রমাণ হিসেবে এই নিকা নামা চাইবে। সুতরাং আপনারা বুঝতেই পারতেছেন এই বিয়ের রেজিস্ট্রেশনটা কতটা জরুরী।

বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ফি

বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই বিশেষ করে গ্রাম এলাকার মানুষের বিভাগ রেজিস্ট্রেশন ফি সম্পর্কে কোন ধারণা থাকে না। তাই অনেক সময় তারা অতিরিক্ত ফি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেন। অনেক লোকাল কাজি রেজিস্ট্রেশন এর জন্য অতিরিক্ত ফি নিয়ে থাকেন। সুতরাং এইসব প্রতারণা থেকে বাঁচতে হলে আমাদের অবশ্যই বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ফি কত সে সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে। রেজিস্ট্রেশন ফি সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে প্রতারণা থেকে বাঁচতে আপনাদের সকলের কাজে লাগবে। বিবাহের দেনমোহরের প্রতি হাজারে ১২ টাকা থেকে ৫০ টাকা করে আপনাকে ফ্রি দিতে হবে। মনে রাখবেন দেনমোহর যাই হোক না কেন বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ফি কখনোই ২০০ টাকার কম হবে না। অর্থাৎ সর্বনিম্ন ২০০ টাকা হতে হবে আর যদি দেনমোহর চার লক্ষ টাকার অধিক হয় তাহলে প্রতি ১ লক্ষ টাকার জন্য একশত টাকা করে ফি প্রদান করতে হবে। মনে রাখবেন বিয়ে রেজিস্ট্রেশন ফি শুধুমাত্র স্বামীকেই প্রদান করতে হবে।

পরিশেষে, বিবাহ রেজিস্ট্রেশন স্বামী এবং স্ত্রী উভয়ের জন্য অত্যন্ত জরুরি কেননা এটি একমাত্র বিয়ের প্রামাণ্য দলিল। সুতরাং বাংলাদেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনাদের সকলের উচিত সঠিক সময়ে এবং সঠিক কাজই হতে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা। মনে রাখবেন স্বামী স্ত্রীর জনিত যেকোনো সমস্যার জন্য এই বিয়ের রেজিস্ট্রেশন সনদ গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে।

Comment Here