কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার কিডনি রোগ কেন হয়

বর্তমান সময়ে প্রতিটি মানুষের মাঝে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে। মানুষের এই শারীরিক অসুস্থ গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে কিডনি রোগ।মানব দেহকে সুন্দর ভাবে সঞ্চালন করার জন্য যে অঙ্গ টির ভূমিকা অপরিসীম তা হচ্ছে কিডনি। বর্তমান সময়ের একজন মানুষের বিভিন্ন কারণে কিডনির বেশ কিছু সমস্যা তৈরি হয়। কিডনির এই শারীরিক জটিলতাকে মূলত কিডনি রোগ বলা হয়। বর্তমান সময়ের অধিকাংশ মানুষের কিডনি রোগের বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশিত হচ্ছে। অনেক সময় এই লক্ষণগুলো সম্পর্কে না জানার কারণে তারা ঠিকমতো বিষয়টি বুঝতে পারছে না। তাই আমরা আজকে নিয়ে এসেছি আমাদের প্রতিবেদনে কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কিত প্রতিবেদনটি। যার মাধ্যমে আপনারা কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে জানতে পারবেন।
মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের নাম হচ্ছে কিডনি। যা মানব দেহকে পরিচালনা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বর্তমান সময়ে মানুষের মাঝে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা যাচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে কিডনি রোগ সমূহ। কেননা বর্তমান সময় অনেকের মাঝে কিডনির বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা যাচ্ছে। একজন ব্যক্তির কিডনি রোগ গুলোর পূর্বে বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশিত হচ্ছে এই লক্ষণ গুলোর মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা মাধ্যমে সঠিকভাবে কিডনি রোগ গুলো শনাক্ত করা যাচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির কারণে এখন সকল ধরনের কিডনি রোগ উন্নত যন্ত্রপাতির মাধ্যমে পরীক্ষা করে সঠিক চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও দেশে এখন কিডনি বিশেষজ্ঞ বেশ কিছু অভিজ্ঞ ডাক্তার তৈরি হচ্ছেন এবং হাসপাতাল রয়েছে যেগুলোতে কিডনি প্রতিস্থাপন থেকে শুরু করে কিডনির প্রতিটি রোগের সঠিক চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
কিডনি রোগের লক্ষণ
মানবদেহের বিভিন্ন ধরনের অঙ্গের মধ্যে কিডনিতে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। কিডনি রোগের পূর্বে কিডনি রোগের বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশিত হয় এই লক্ষণগুলো জানার মাধ্যমে সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কিডনি রোগ সনাক্ত করা সম্ভব। তাই আমরা আজকে আপনাদের উদ্দেশ্যে কিডনি রোগের লক্ষণ সম্পর্কিত তথ্যগুলো নিয়ে এসেছি যেগুলো আপনাদের সকলকে কিডনি রোগের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে সুস্পষ্ট ভাবে জানতে সাহায্য করবে। আজকের এই লক্ষন গুলোর মাধ্যমে আপনারা সঠিকভাবে কিডনি রোগ গুলো শনাক্ত করতে পারবেন। নিচে কিডনি রোগের লক্ষণ গুলো তুলে ধরা হলো:
- পা, গোড়ালি এবং পায়ে ফোলাভাব
- ঘন ঘন প্রস্রাব করা
- ক্লান্তি এবং দুর্বলতা অনুভব করা
- মনোনিবেশ করতে অসুবিধা
- বমি বমি ভাব
- ত্বকের চুলকানি
- পেটে ব্যথা
- শ্বাসকষ্ট
- ক্ষুধা হ্রাস
- মুখের স্বাদ হ্রাস
- প্রস্রাবে রক্ত
- প্রস্রাব গাঢ় লাল, বাদামী বা চা-রঙের মত
- পিঠের পাশের নিচের দিকে ব্যথা
- উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি।
কিডনি রোগের প্রতিকার
বর্তমান সময় কিডনি সকল রোগের জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও বিভিন্ন ধরনের হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে যেখানে কিডনি রোগের জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা সঠিক চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন। এছাড়া প্রতিটি মানুষকে কিডনি রোগের প্রতিকারের জন্য বেশ কিছু শারীরিক পরামর্শ প্রদান করেন যেগুলো প্রতিনিয়ত পালন করার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষ কিডনি রোগের প্রতিকার করতে পারে। তাই আমরা আজকে আপনাদের উদ্দেশ্যে কিডনি রোগের প্রতিকার সম্পর্কিত তথ্যগুলো তুলে ধরেছি যেগুলোর মাধ্যমে আপনারা সকলকে কিডনি রোগের প্রতিকার করতে পারবেন এবং কিডনি সুস্থ রাখতে পারবেন। নিচে কিডনি রোগের প্রতিকার তুলে ধরা হলো:
- ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ রাখা (HBAIC ৭ (সাত) এর নিচে)
- উচ্চ রক্তচাপ আক্রান্ত রোগীদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে (১৩০/৮০এর নিচে)।
- ধূমপান পরিহার করুন।
- ক্রনিক কিডনি ডিজিজ বা দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ ঠেকাতে প্রথমত চাই রক্তে শর্করা ও রক্তচাপের সুনিয়ন্ত্রণ। এটা না করতে পারলে কেবল খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে কিডনি ভালো রাখা যাবে না।
- যেসব কিডনি রোগীর শরীরে পানি আসে বা ফুলে যায়, তাদের ক্ষেত্রে দৈনিক পানির পরিমাণ চিকিৎসক মেপে দিতে পারেন। নয়তো পানি নিয়ে ভাবনার কিছু নেই। তবে সেই সঙ্গে কমাতে হবে সোডিয়াম বা রান্নার লবণের পরিমাণও। এটি রক্তচাপ যেমন বাড়ায়, তেমনি পানি জমতেও সাহায্য করে।
- অসুস্থ কিডনি অনেক সময় রক্ত থেকে পটাশিয়াম নিষ্কাশন ঠিকমতো করতে পারে না। এতে রক্তে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায়। মাঝেমধ্যে রক্তে ইলেকট্রোলাইট পরীক্ষা করা হলে বিষয়টা ধরা পড়ে। যাদের এই প্রবণতা আছে তারা উচ্চ পটাশিয়ামযুক্ত ফলমূল এড়িয়ে চলাই ভালো। বেশি পটাশিয়াম আছে কলা, কমলা, ডাব, তরমুজ, টমেটো, কিশমিশ, অ্যাভোকেডো ইত্যাদি ফলে।
- পটাশিয়াম মুক্ত খাবার যেগুলো তে পটাশিয়ামের পরিমাণ কম এমন ফল যেমন আপেল, আঙুর, আনারস, স্ট্রবেরি ইত্যাদি খেতে বাধা নেই।
- কিডনি সমস্যায় অনেক সময় ফসফরাস বা ফসফেটের পরিমাণও যায় বেড়ে। ভুট্টার তৈরি খাবার, কোলা-জাতীয় পানীয়, কিছু বাদামে ফসফেটের পরিমাণ বেশি। তবে চিকিৎসক চাইলে ফসফেট বাইন্ডার ওষুধের মাধ্যমে ফসফরাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
- কিডনি রোগীদের ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ‘ডি’র অভাব দেখা দেয়, রক্তস্বল্পতা হয়। তাই ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
- শারিরীক ব্যায়াম করা।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করা।
- রক্তে লবণের মাত্রা কম বা বেশি হলে উচ্চরক্ত চাপ বা নিম্ন রক্তচাপ দেখা দেয়ঃ নিম্নচাপ দেখা দিলে মাথা ঘুরতে থাকবে তখন বুঝতে হবে রক্তে লবণের ঘাটতি রয়েছে। লবণপানি বা লবণ মিশ্রিত সরবত পান করলে অল্প সময়ের মধ্যে রক্তের চাপ স্বাভাবিক হয়ে আসে।