কবিতা

চাঁদ নিয়ে ভালোবাসার কবিতা

সম্মানিত পাঠক ভাই বোন বন্ধুগণ আপনাদের সকলের উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছি আমাদের ওয়েবসাইটে আজকে চাঁদ নিয়ে ভালোবাসার কবিতা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন। কেননা বিখ্যাত কবি ও সাহিত্যিকরা প্রাকৃতিক উপাদান গুলো থেকে তাদের কবিতার রূপ রস ও ছন্দ সংগ্রহ করত। প্রাকৃতিক অন্যতম একটি সৌন্দর্যময় উপাদান হচ্ছে চাঁদ। যাকে অনেকেই তাদের কবিতায় উপমা হিসেবে ব্যবহার করত। অনেকেই আবার চাঁদ কে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের কবিতা লিখেছেন। আজকে আমরা আমাদের আলোচনায় সেরকম এই কবি-সাহিত্যিকদের চাঁদকে নিয়ে কবিতাগুলো উপস্থাপন করব। আপনারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে আজকে চাঁদ নিয়ে বেশ কিছু কবিতা সংগ্রহ করতে পারবেন। এই কবিতা গুলো আপনি আপনার ব্যক্তিগত জীবনে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। আশা করছি আমাদের আজকের এই চাঁদ নিয়ে কবিতা গুলো আপনাদের পছন্দ হবে।

পৃথিবীতে সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে চাঁদের গুরুত্ব রয়েছে। কেননা পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ হচ্ছে চাঁদ।এই চাঁদ অপরুপ সৌন্দর্যের অধিকারী। প্রাকৃতিক প্রতিটি উপাদানের থেকে চাঁদ অত্যন্ত সৌন্দর্যের অধিকারী। তাইতো সৌন্দর্য প্রিয় প্রতিটি মানুষ চাঁদকে অনেক পছন্দ করে থাকে। অনেকেই আবার প্রিয়জনদের সৌন্দর্যের প্রশংসা হিসেবে চাঁদ কে ব্যবহার করে থাকে। প্রাকৃতিক উপগ্রহ এই চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই। এটি সূর্যের আলো নিজেকে আলোকিত করে তোলে। প্রতিটি মানুষ তাদের এই জোসনা অনেক পছন্দ করে থাকে। তারা আপনজনদের অথবা প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে জোস্না রাতে বিভিন্ন কবিতা এমনকি জোসনার আলো ও সৌন্দর্য উপভোগ করে থাকে। অনেক কবি র কবিতার ভাষায় চাঁদ হয়ে উঠেছে প্রধান একটি উপমা। তারা চাঁদ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কবিতা ও সাহিত্য রচনা করে থাকে। পৃথিবীতে সৌন্দর্যের প্রতীক ও সৌন্দর্য প্রিয় প্রতিটি মানুষের কাছে চাঁদের গুরুত্ব অপরিসীম।

চাঁদ নিয়ে ভালোবাসার কবিতা

অনেকেই অনলাইনে চাঁদ নিয়ে ভালোবাসার কবিতা গুলো অনুসন্ধান করে থাকে। তাদের উদ্দেশ্যে আমরা নিয়ে এসেছি আজকে আমাদের ওয়েব সাইটে চাঁদ নিয়ে ভালোবাসার বেশ কিছু কবিতা। কেননা অনেক কবি ও সাহিত্যিক রয়েছে যারা প্রাকৃতিক উপগ্রহ চাঁদ নিয়ে ভালবাসার বেশ কিছু কবিতা লিখেছেন আমরা আজকে আমাদের আলোচনায় তাদের প্রকাশিত বেশ কিছু ভালোবাসার কবিতা তুলে ধরব। আপনারা আমাদের আজকের এই পোষ্ট থেকে চাঁদ নিয়ে ভালোবাসার কবিতা গুলো সংগ্রহ করে আপনার ব্যক্তিগত জীবনে বিভিন্ন প্রয়োজনে কবিতা গুলো ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া আপনার আপনজন ও বন্ধুদের মাঝে আমাদের আজকের এই কবিতা গুলো শেয়ার করতে পারবেন। নিচে চাঁদ নিয়ে ভালোবাসার কবিতা গুলো তুলে ধরা হলো:

চাঁদিনীতে

জীবনানন্দ দাশ

বেবিলোন্ কোথা হারায়ে গিয়েছে,- মিশর- অসুর কুয়াশাকালো;

চাঁদ জেগে আছে আজও অপলক, মেঘের পালকে ঢালিছে আলো!

সে যে জানে কত পাথারের কথা, কত ভাঙা হাট মাঠের স্মৃতি!

কত যুগ কত যুগান্তরের সে ছিল জ্যোৎস্না , শুক্লা তিথি!

হয়তো সেদিনও আমাদেরই মতো পিলুবারোঁয়ার বাঁশিটি নিয়া

ঘাসের ফরাশে বসিত এমনি দূর পরদেশী প্রিয় ও প্রিয়া!

হয়তো তাহারা আমাদেরই মতো মধু-উৎসবে উঠিত মেতে

চাঁদের আলোয় চাঁদমারী জুড়ে-সবুজ চরায়, সবজি ক্ষেতে

হয়তো তাহারা দুপুর-যামিনী বালুর জাজিমে সাগরতীরে

চাঁদের আলোয় দিগদিগন্তে চকোরের মতো চরিত ফিরে!

হযতো তাহারা মদঘূর্ণনে নাচিত কাঞ্চীবাঁধন খুলে

এমনি কোন্- এক চাঁদের আলোয়, মরু ‘ওয়েসিসে তরুর মুলে!

বীর যুবাদল শত্রুর সনে বহুদিনব্যাপী রণের শেষে

এমনি কোন্- এক চাঁদনীবেলায় দাঁড়াত নগরীতোরণে এসে!

কুমারীর ভির আসিত ছুটিয়া, প্রণয়ীর গ্রীবা জড়ায়ে নিয়া

হেঁটে যেত তারা জোড়ায়-জোড়ায় ছায়াবীথিকার পথটি দিয়া

তাদের পায়ের আঙুলের ঘায়েখড় খড় পাতা উঠিত বাজি,

তাদের শিয়রে দুলিত জ্যোৎস্না-চাঁচর-চিকন পত্ররাজি!

দখিনা উঠিত মর্মরি মধুবনানীর লতা-পল্লব ঘির

চপল মেয়েরা উঠিত হাসিয়া,- ‘এল বল্লভ-এল রে ফিরে!

-তুমি ঢুলে যেতে, দশমীর চাঁদ তাহাদের শিরে সারাটি নিশি,

নয়নে তাদের দুলে যেতে তুমি- চাঁদনী-শরাব, সুরার শিশি!

সেদিনও এমনি মেঘের আসরে জ্বলেছে পরীর বাসরবাতি,

হয়তো সেদিনও ফুটেছে মোতিয়া-ঝরেছে চন্দ্রমল্লীপাঁতি!

হয়তো সেদিনও নেশাখোর মাছি গুমরিয়া গেছে আঙুর বনে,

হয়তো সেদিনও আপেলের ফুল কেঁপেছে আঢুল হাওয়ার সনে!

হয়তো সেদিনও এলাচির বন আতরের শিশি দিয়েছে ঢেলে

হয়তো আলেয়া গেছে ভিজা মাঠে এমনি ভূতুড়ে প্রদীপ জ্বেলে

হয়তো সেদিনও ডেকেছে পাপিয়া কাঁপিয়া কাঁপিয়া ‘সরোর শাখে,

হয়তো সেদিনও পাড়ার নাগরী ফিরেছে এমনি গাগরি কাঁখে!

হয়তো সেদিনও পানসী দুলায়ে গেছে মাঝি বাঁকা ঢেউটি বেয়ে,

হয়তো সেদিনও মেঘের শকুনডানায় গেছিল আকাশ ছেয়ে!

হয়তো সেদিনও মাণিকজোড়ের মরা পাখাটির ঠিকানা মেগে

অসীম আকাশ ঘুরেছে পাখিনী ছটফট্ দুটি পাখার বেগে!

হয়তো সেদিনও খুর খুর করে খরগোশ ছানা গিয়েছে ঘুরে

ঘন মেহগিনি-টার্পিন-তলে-বালির জর্দা বিছানা ফুঁড়ে!

হয়তো সেদিনও জানালার নীল জাফরির পাশে একেলা বসি

মনের হরিণী হেরেছে তোমারে- বনের পারের ডাগর শশী!

শুক্লা একাদশীর নিশীথে মণিহর্ম্যের তোরণে গিয়া

পারাবত-দূত পাঠায়ে দিয়েছে প্রিয়ের তরেতে হয়তো প্রিয়া!

অলিভকুঞ্জে হা হা করে হাওয়া কেঁদেছে কাতর যামিনী ভরি!

ঘাসের শাটিনে আলোর ঝালরে ‘মার্টিল্ পাতা পড়েছে ‘ঝরি!

‘উইলোর বন উঠেছে ফুঁপায়ে-‘ইউ তরুশাখা গিয়েছে ভেঙে,

তরুণীর দুধ-ধবধবে বুকে সাপিনীর দাঁত উঠেছে রেঙে!

কোন্ গ্রীস,- কোন্ কার্থেজ, রোম, ‘ক্রবেদুর-যুগ কোন,-

চাঁদের আলোয় স্মৃতির কবর-শফরে বেড়ায় মর!

জানি নাতো কিছু-মনে হয় শুধু এমনি তুহিন চাঁদের নিচে

কত দিকে দিকে-কত কালে কালে হয়ে গেছে কত কি যে!
কত যে শ্মশান-মশান কত যে-কত যে কামনা-পিপাসা -আশা

অস্তচাঁদের আকাশে বেঁধেছে আরব-উপন্যাসের বাসা!

 

খালিল জিবরানের চাঁদ

পূর্ণ চাঁদ

শহরের ওপর সগৌরবে পূর্ণ চাঁদ উঠেছে

সে-শহরের সব কুকুর চাঁদের দিকে তাকিয়ে

ঘেউ ঘেউ শুরু করেছে।
কেবল একটি কুকুর ঘেউ দেয়নি, ভারি গলায় সে

অন্যদের বলেছে, ‘ঘেউ ঘেউ করে তোমরা তার

মুখ থেকে নির্জনতা খসাতে পারবে না

কিংবা তোমাদের ডাকে চাঁদ পৃথিবীতে নেমে আসবে না।’

তখন অন্য কুকুরেরা ঘেউ ঘেউ থামাল, নেমে

এলো ভয়ংকর নির্জনতা। কিন্তু যে-কুকুর

তাদের সাথে কথা বলেছে, বাকি রাত

নির্জনতার জন্য ঘেউ ঘেউ চালিয়ে গেল।

মাহমুদ দারবিশের চাঁদ

অবরোধ

এক নারী মেঘকে বলল, আমার প্রিয়তমকে ঢেকে রেখো

তার রক্তে আমার পরনের কাপড় ভিজে গেছে।

তুমি যদি বৃষ্টি না হও, প্রিয়

তবে বৃক্ষ হও

উর্বরতায় পরিপূর্ণ, বৃক্ষ হও

তুমি যদি বৃক্ষ না হও, প্রিয়

তবে পাথর হও

আর্দ্রতায় পরিপূর্ণ পাথর হও

যদি তুমি পাথর না হও, প্রিয়

তবে চাঁদ হও,

প্রিয় নারীর স্বপ্নের, চাঁদ হও

[এ-কথাই বলেছে এক নারী তার পুত্রের শেষকৃত্যে।]

নিজার কববানির চাঁদ

রুটি, মাদক ও চাঁদ

পূর্বদিকে যখন চাঁদের জন্ম হয়

সাদা ছাদ তখন ঘুমের ঘোরে

আলোর সত্মূপের নিচে

মানুষ তাদের দোকান ছেড়ে দলে দলে বেরোয়

তারা চাঁদের সাথে সাক্ষাৎ করবে

হাতে রুটি, রেডিও নিয়ে পর্বতের চূড়ায়

এবং সাথে তাদের মাদক।

সেখানে তারা কল্পনা বেচাকেনা করে

Comment Here