বিজয় দিবসের উপস্থাপনা, বক্তব্য, ভাষণ, স্লোগান, রচনা ২০২২

বিজয় অর্জন করতে যতটা কষ্ট আর ক্লেশ ভোগ করতে হয় বিজয়ের উদযাপন ঠিক ততটাই মধুর হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ অর্জন করেছে স্বাধীনতা। ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ তাইতো বাঙ্গালীদের জাতীয় জীবনে এক অন্যতম আনন্দের অধ্যায়। চলছে বিজয়ের মাস। আর বিজয়ের মাসে আজকে আলোচনা করব বিজয় দিবসের উপস্থাপনা, বক্তব্য, ভাষণ, স্লোগান, কবিতা, রচনা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। আপনারা যারা বিজয় দিবসের উপস্থাপনা, বক্তব্য, ভাষণ, স্লোগান, কবিতা, রচনা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তারা হাত-পা গুটিয়ে বসে না থেকে সম্পূর্ণ নিবন্ধটি পড়ে ফেলুন। আশা করছি বিজয় দিবসের উপস্থাপনা বক্তব্য ভাষণ স্লোগান কবিতা রচনা সম্পর্কে অজানা অনেক সব তথ্য জানতে পারবেন।
বিজয় দিবসের উপস্থাপনা
মহান মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত বাংলার বিজয় এক সাফল্যমন্ডিত গৌরবের সাক্ষী হিসেবে সুপরিচিত। নয় মাস রক্ত খেয়ে যুদ্ধের পর বাঙালিরা যেন খুঁজে পেয়েছে তাদের শান্তির নীড়, পেয়েছে মাথা গোজার ঠাঁই। আর তাইতো বিজয়ের আনন্দে উচ্ছসিত বাংলার আপামার জনসাধারণ। প্রতিবছর ডিসেম্বর আসলেই বিজয়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। তাইতো ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসকে উদযাপন করতে কোনরকম কার্পণ্য করে না বাঙালি মন। আজকের অনুচ্ছেদে বিজয় দিবসের উপস্থাপনা কিভাবে করতে হয় তা নিয়ে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা উপস্থাপন করব। চলুন দেখে নেয়া যাক দারুন কিছু বিষয় দিবসের উপস্থাপনা করার টেকনিক-
বিজয় দিবসের বক্তব্য
বাঙালি জীবনে এক ঐতিহাসিক গৌরবময় অধ্যায় মহান মুক্তিযুদ্ধের 16ই ডিসেম্বর। ডিসেম্বরে কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সাজে বৈচিত্র্য সব বিজয়ের উৎসবে। আর এ সকল অনুষ্ঠানে দারুন একটি বক্তব্য উপস্থাপনা করে অনেকেই মানুষকে তাক লাগিয়ে দিতে চান। কিন্তু ব্যতিক্রমধর্মী চিন্তা চেতনা এবং সৃষ্টিশীল বক্তব্যের অভাবে তা হয়ে ওঠে না। আজকে আপনারা আমার অনুচ্ছেদে দারুন কিছু সৃষ্টিশীল বক্তব্য দেয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন দেখে নেই কিছু ব্যতিক্রমধর্মী বক্তৃতা।
বিজয় দিবসের ভাষণ ২০২২
বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপনে বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠে আসা রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবক দলগুলো আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালান। বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এসকল অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিগণ জ্বালাময়ী ভাষণ প্রদান করে জনগণের মাঝে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সচেষ্ট থাকেন। আজকে আমার অনুচ্ছেদে আপনারা জানতে পারবেন বিজয় দিবসের ভাষণ কেমন হওয়া উচিত এবং কিভাবে সাজানো উচিত বিজয় দিবসের ভাষণ। এখান থেকে বিজয় দিবসের অনবদ্য ভাষণের পদ্ধতি জেনে বাস্তব জীবনে জ্বালাময়ী ভাষণ প্রদান করে জনগণের বাহবা কুড়াতে সমর্থ হবেন বলে আশা করি।
উপস্থিত সকল শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত প্রধান অতিথি, আসসালামু আলাইকুম।
আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস, বাঙালি জাতীয় জীবনে এক গৌরবময় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের ইতিহাসে অসামান্য কীর্তি হয়ে থাকবে চিরকাল। যুগের পর যুগ এই অনুপ্রেরণা আমাদের জীবনকে নতুন উদ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
প্রিয় সুধি,
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের ঘটনা আপনারা সবাই জানেন। সেদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে বাঙালি জাতিকে শেষ করার পরিকল্পনা করেছিল। তবে বাঙালি জাতির আস্থা ও সাহসের কারণে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।বাংলাদেশের এবং এদেশের প্রতিটি মানুষের জাতীয় জীবনের অন্যতম গৌরবময় ও পবিত্রতম দিন। বিজয় দিবসের এই গৌরবময় মুহুর্তে প্রথমেই যে কথাটি মনে আসে তা হলো এদেশের বহু দেশপ্রেমিক শহীদের কথা। ১৯৭১ সালের এই দিনে ২৪ বছরের পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসনের দুর্দশা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পায় বাংলার মানুষ। সেই সময়ের বীর বাঙালিরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বুকে বুলেট মেরে স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনে। তাই জাতীয় প্রগতি ও চেতনার মূলে বিজয় দিবসের তাৎপর্য অপরিসীম।
আমার ভাই,
এদেশের মানুষ একসময় ‘বিজয়’ শব্দ দিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিল আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। আপনারা লক্ষ্য করেছেন, পারস্পরিক বৈরিতা, চরম অসহিষ্ণুতা, রাজনৈতিক ধর্মান্ধতা, সামাজিক অবক্ষয়, সন্ত্রাসের সশস্ত্র বিদ্রোহ ও সংঘাত আমাদের জাতীয় জীবনে নতুন উপসর্গ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এই সব অপশক্তি দেশে অরাজকতা, অস্থিরতা, রক্তপাত সংঘাত, নিরাপত্তাহীনতা, সন্ত্রাস। বর্তমানে এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে, আমরা কি সত্যিই স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম? এটাই কি আমাদের বাঙালি জাতির ইতিহাস ও সভ্যতার মূলমন্ত্র ছিল? এভাবে কি আমরা পৃথিবীতে আমাদেরশক্তিশালী মহাবিশ্বের অস্তিত্ব তুলে ধরতে পারব?
আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি, কিন্তু এর তাৎপর্য যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে না পারায় এদেশের মানুষ এখনো স্বাধীন হয়নি। তাই দেশের সর্বোচ্চ থেকে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সকলের কাছে আমার বিনীত আবেদন, আসুন আমরা সবাই আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি। আমরা আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে দেশকে সুন্দর ও স্বাধীন দেশ হিসেবে গড়ে তুলি।ধন্যবাদ সবাইকে
বিজয় দিবসের স্লোগান ২০২২
ডিসেম্বর এসেছে অথচ বাঙালির মনেই বিজয়ের আনন্দ আসেনি তা কল্পনা করাও যেন অসম্ভব। ডিসেম্বর আসলেই বাঙালিরা মেতে ওঠে নানা রকম উৎসবে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান কিংবা রেলিতে 16 ডিসেম্বর অর্থাৎ বিজয় দিবসে দারুন কিছু স্লোগান দিয়ে জনসমাগম মাতিয়ে তোলার প্রয়োজন হয়। এ নিয়ে আপনারা অনেকেই বিজয় দিবসের দারুন কিছু স্লোগান অনুসন্ধান করে থাকেন। তাইতো আপনাদের সামনে বিজয় দিবসের অনবদ্য সব স্লোগান নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম।
বিজয় দিবসের কবিতা
বিজয়ের আনন্দ কত যে মধুর তা হয়তোবা যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতি ছাড়া বুঝতে পারবে না। বাঙালিরা যেদিন স্বাধীনতা লাভ করে বিজয়ের স্বাদ পেল সেদিন তাদের আনন্দ ছিল দেখার মত। হৃদয়ের গহীন থেকে যেন বিজয়ের বাঁধ ভাঙ্গা উল্লাস কোন ভাবেই আটকানো সম্ভব হচ্ছিল না। এ ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশের কথা মনে করিয়ে দেয় ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ। বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে আজকে দারুন কিছু কবিতা উপস্থাপন করা হলো-
বিজয় আমার
-এ কে আজাদ
বিজয় আমার
পতাকার রং
মানচিত্রের রেখা,
বিজয় আমার
আনন্দ ঘন
ভিটে-মাটি ফিরে দেখা।
বিজয় আমার
স্মৃতির মিনার
সৌধ চূড়ার গান,
বিজয় আমার
স্বাধীন দেশের
সুখভরা অফুরান।
স্বাধীনতা তুমি
-কাজী আবুল কাসেম রতন
স্বাধীনতা তুমি
বাংলা দেশের
বাংলা মায়ের
শুভেচ্ছা।
স্বাধীনতা তুমি
দাদুর মুখে
রূপকথারই
সু-কিচ্ছা
স্বাধীনতা তুমি
সূর্যে ভাষা
রক্তিম হেম।
স্বাধীনতা তুমি
মুক্তি সেনার
মুক্ত প্রেম।
স্বাধীনতা তুমি
উড়ে যাওয়া,
স্বাধীন পাখির
প্রত্যাশা।
স্বাধীনতা তুমি
প্রিয় জনতার
প্রেম প্রীতি জয়
ভালবাসা।
বিজয় দিবসের রচনা
বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাঙালিরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে। বিলিয়ে দিয়েছিল নিজের বুকের তাজা রক্ত। উৎসর্গ করেছে কত শত মা-বোনের সম্ভ্রম। এত ত্যাগ আর তিতিক্ষার বিনিময়ে যে স্বাধীনতা আমাদের হলো তাকে কি হেলা করে কাটিয়ে দেয়া যায়! তাইতো বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে বাঙালি জীবনে তৈরি হচ্ছে নানান সব সাহিত্যকর্ম। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কথা সাহিত্যিক রচনা করে গেছেন কত শত সাহিত্য। আজকে দারুন কিছু বিজয় দিবসের রচনা নিয়ে হাজির হয়ে গেছি আমি।