ভূমি উন্নয়ন কর অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন 2023

যাদের জমি রয়েছে বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিকানা অংশ হিসেবে জমি পেয়েছেন তাদের সবার জন্য ভূমিকা দেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রতিবছর সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে ভূমিকর জমা দেওয়া দিয়ে রশিদ নিতে হয়। তবে এখন থেকে এই কর অনলাইনে দেখা যাবে। বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি সেবা ডিজিটাইজেশন মনিটরিং সেলের প্রধান ও উপ সচিব ডঃ মোঃ জাহিদ হোসেন বিবিসি বাংলাতে বলেছেন ভূমিকর দেওয়ার জন্য আগে ভূমি অফিস যেতে হতো কিন্তু এখন ঘরে বসে যে কেউ তার জমির কর পরিশোধ করতে পারবে অনলাইনে। বাংলাদেশের জমি জায়গা সংক্রান্ত জটিলতার অবসান ঘটাতে সব মালিকের তথ্য নিয়ে ভূমি তথ্য ব্যাংক উদ্বোধন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ভূমিকর অনলাইনে দেওয়ার ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে। এই তথ্য ব্যাংকের সকল ভূমি মালিকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।। ফলে জমি নিয়ে জালিয়াতি দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমি তথ্য ব্যাংকের পাশাপাশি অনলাইনে ভূমিকর দেওয়ার ব্যবস্থা উদ্বোধন করেছেন। হলে যে কোন নাগরিক যে কোন স্থান থেকে তার জমি সংক্রান্ত তথ্য যাচাই বা সংগ্রহ করতে পারবে এবং অনলাইনে কর পরিশোধ করতে পারবে। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন,, বাংলাদেশের মানুষ যেন ভূমি অফিসে না এসেও যেন ভূমি সংক্রান্ত সকল সেবা পেতে পারেন, সেই জন্য সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেশনের এই ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মানুষ হয়রানি মুক্ত সেবা পাবে।
কি কাজে লাগবে ভূমি তথ্য ব্যাংক?
বাংলাদেশের ভূমি অফিস হয়রানি, অনিয়ম,দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে গ্রাহকদের। একটি প্রতিবেদনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বলেছেন, বাংলাদেশ ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবা খাতে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রুপ লাভ করেছে। এসব হয়রানি কমাতে এবং দ্রুত গ্রাহক সেবা দিতে ভূমি তথ্য ব্যাংক চালু করেছে সরকার। এইসঙ্গে ভূমিকর দেওয়া থেকে শুরু করে ভূমি দপ্তরের বেশিরভাগ কাজ অনলাইনে সম্পূর্ণ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ভুমি তথ্য ভান্ডারে সরকারি জমির তথ্য ,খাস জমি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, হাট-বাজার, চা বাগান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দকৃত জমে সকল তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। সেইসঙ্গে থাকবে বর্তমান অবস্থানসহ এস এ খতিয়ানও আর এস খতিয়ান এর বর্ণনা। ফলে বহু পুরাতন দলিল হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলেও সরকারের রেকর্ড নিয়ে কোন জটিলতা থাকবে না। আবার অনলাইনে সংরক্ষিত থাকায় এসব রেকর্ড কেউ জালিয়াতেও করতে পারবেনা।
ভূমির উন্নয়ন কর পরিষদ করা যাবে অনলাইন এর মাধ্যমে
ভূমি উন্নয়ন কর পরিষদে জন্য বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয় একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছে। প্রথমে ভূমির মালিক কে এই অ্যাপের সঙ্গে নিজেকে নিবন্ধন করে নিতে হবে, একবার নিবন্ধিত হলে তার পরবর্তীতে আর নিবন্ধন প্রয়োজন হবে না। তিনটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিবন্ধন কার্যক্রম করা সম্ভব যেমন:
১. Land.gov.bd অথবা ldtax.gov.bdএই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম তারিখ ও মোবাইল ফোন দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।
২.ভূমি মন্ত্রণালয়ের কল সেন্টার ৩৩৩ অথবা ১৬১২২ নম্বরে ফোন করে এনআইডি, জন্ম তারিখ, ফোন নম্বর ও জমির তথ্য প্রদান করতে হবে।
৩. যেকোনো ইউনিয়নের ডিজিটাল অফিসে এনআইডি কার্ড জন্ম তারিখ ও খতিয়ান নম্বর ব্যবহার করতে হবে।
নিবন্ধনের পর এই পোর্টালে লগইন করে অথবা ইউনিয়ন ডিজিটাল অফিসে গিয়ে ভূমির উন্নয়ন কর দিতে পারবেন। এই সময় বিকাশ বা নগদের মত মোবাইল ওয়ালেট ব্যবহার করে করে টাকা পরিশোধ করা যাবে। কর দেওয়ার পর ইমেইলে অটোমেটিক একটি রশি চলে আসবে ।
কর দেওয়া হলে কি তা সংশ্লিষ্ট অফিসে অন্তর্ভুক্ত হবে?
ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি সেবা ডিজিটাইজেশন মনিটরিং সেলের প্রধান ও উপ সচিব ডক্টর মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন বলেছেন যারা অনলাইনে ভূমিকর দেবেন সেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার জমির অনুকূলে তালিকাভুত্ব হয়ে যাবে।তিনি জানান এই সংক্রান্ত সব কার্যক্রম তারা সম্পন্ন করেছেন যারা এখনো পোর্টালে নিজেদের নিবন্ধন করবেন তারা নিশ্চিন্তে ভূমির কর দিতে পারবেন। তবে ভবিষ্যতে কোনো কারণে কোনো রকম সমস্যা তৈরি হলে ইমেইলে যে ভূমিকর দেওয়ার রশিদ আসবে সেটা সমাধানে কাজে লাগবে। এখন সাধারণত পরীক্ষামূলকভাবে ই-রেজিস্ট্রেশন ও ই- মিউটেশন চলছে। শীঘ্রই দেশব্যাপী এটি চালু করার আশা করছেন কর্মকর্তারা।