ইসলাম

রমজান – রোজা ২০২৩ কবে কত তারিখে

মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া যে, তিনি মেহেরবানী করে আমাদেরকে সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব, আল কুরআন কারীম দান করেছেন। মহান নিয়ামত হিসেবে আরো দিয়েছেন সারুন রমজানের সিয়াম, লাইলাতুল ক্বদর। আমরা পেয়েছি সাইদুল মুরসালিন, খেতামুন্নাবীয়্যীন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে, যাকে প্রেরণ করা হয়েছে জগতসময়ের জন্য রহমত হিসেবে।  রমজান, রোজার গুরুত্ব অপরিসীম রোজার ২০২৩ সালে শুরু হবে কত সালে আমরা নিজে আলোচনা করলাম।

সিয়াম, রমজান বা রোজা কত তারিখে ২০২৩ সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষেরা তা জানতে চায়। কারণ তাদের রমজান মাস ২০২৩ বা মাস ব্যাপী রোজা পালনের প্রস্তুতি নিতে হয়। রোজার গুরুত্ব, তাৎপর্য, ফজিলত ও প্রতিদান উম্মতে মুহাম্মদীকে অনন্য সম্মান ও মর্যাদায় উত্তীর্ণ করেছে। দ্বিতীয় হিজরী এ বিধান ফরজ করা হয়েছে,  যা ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের অন্যতম।

আখিরাতে বিশ্বাসী কোন মুসলমানের জন্য এর চেয়ে বড় সুসংবাদ আর কি হতে পারে যে, মহান প্রভু নিজেই ঘোষণা করেছেন, সিয়াম আমার জন্য এবং আমি নিজেই এ পুরস্কার দেবো।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি পূর্ণ ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখে, তার পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয।

২০২৩ সালের রোজা কবে কত তারিখে

২২ শে ফেব্রুয়ারি বুধবার থেকে পবিত্র শাবান মাস গণনা শুরু, আগামী ৭ই মার্চ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে। শবে বরাতের ১৫ দিন পর রোজা শুরু হয় সাধারণভাবে। আরবি মাসগুলো যেহেতু চাঁদ দেখার পর নির্ভরশীল হয, সেজন্য  ২০২৩ সালের২২ শে মার্চ সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা গেলে ২৩শে মার্চ থেকে প্রথম রোজা রাখা শুরু হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৩ সালের রমজানের নতুন চাঁদ দেখা যাবে বাইশে মার্চ রাতে। সে হিসেবে পবিত্র ঈদুল ফিতর একুশের এপ্রিল ২০২৩ শুক্রবার হতে পারে। ইংরেজি ২০২৩ সালের পবিত্র রোজা ২৩ শে মার্চ ২০২৩ ইংরেজির ক্যালেন্ডার অনুযায়ী রমজান মাস শুরু হবে।

রমজান মাস

আরবে তথা চন্দ্র নব মাসের নাম রামাদান, যা বাংলায় রমজান মাস হিসেবে পরিচিত। এটি সাবান ও শাওয়ালের মধ্যবর্তী মাস। নারীদের জন্য এ মাসের সিয়াম রোজা পালন করা ফরজ। অন্যান্য আরবি মাসের মতো এটিও ২৯ বা ৩০ দিনের হয়ে থাকে।

আরবি রামাদান শব্দটির মূল ধাতু হচ্ছে রামাদ। যার অর্থ উত্তাপ, দহন, জলন  ও ছাই ভস্মে পরিণত হওয়া । কেননা, রোজা রাখার  দরুন  খুদা ও পিপাসা তীব্র জ্বালায় রোজাদারের পেট বা উদর জ্বলতে থাকে। তাছাড়া রমজান মাসে রোজাদার গঞ্জের সকল নেক আমল করে তা তার পরবর্তী গুনাহসমূহ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার ও নিশ্চিহ্ন করে দেয়।

রমজান মাসের ফজিলত

মাহে রমজানের ফজিলত অপরিসীম। বছরের ১২ মাসের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মাহে রমজান মাস। এ মাস রহমান, মাগফিরা এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস। এ মাসে নাযিল হয়েছে মানবজাতির মুক্তির দিশারী এবং পথ নির্দেশক আল কুরআনুল কারীম। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, একমাত্র সিয়াম ছাড়া আদম সন্তানের  অন্য সব আমল তার নিজের জন্য, আর সিয়াম হল কেবল আমার জন্য, আমি এর প্রতিদান দেব।

সিয়াম ঢাল স্বরূপ যদি তোমাদের কেউ সিয়াম পালন করে, তাহলে সে যেন অশ্লীল কথা না বলে, যদি কেউ তাকে গালি দেয়, অথবা তার সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়, তবে সে যেন বলে, আমি সিয়াম পালন করি। খাওয়া, পান করা এবং যৌন সংযোগ এই তিনটি রোজা ভঙ্গকারী কাছ থেকে বিরত থাকাকে বলা হয় সাওম।

জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য সিয়াম একটি মজবুত দুর্গ। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, সিয়াম ঢালস্বরূপ এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার এক মজবুত দুর্গ।

রোজার ছয়টি বৈশিষ্ট্য-

১.দৃষ্টি অবনত রাখা

২. জিহ্বা সংযত করা

৩. কান সংরক্ষণ করা

৪. অন্যান্য অঙ্গকে আরাম থেকে বাঁচিয়ে রাখা

৫. অন্যায় ভাবে কাউকে আঘাত করবো না

৬. অন্যায় কাজ কাজে যাব না।

রোজার উদ্দেশ্য হলো গুনা পরিহার করা। পাপ পরিহার না করলে রোজার কল্যাণ লাভ করা যায় না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন কত রোজাদার এমন খুদা ও তৃষ্ণা ব্যথিত তাদের আর কোনো প্রার্থী থাকে না। রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি ইমামের সাথে সাওয়াব হাসিলের আশায় রামাদানের সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।

রোজার উপকারিতা

রমজানের রোজার প্রায় সকল বিধি নিষেধ হয় স্বাস্থ্যবিধি সম্মত। শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে রোজার উপকারিতা অপরিসীম। এক গবেষণায় দেখা গেছে,

রমজানে রোজা রাখলে সুস্থ শরীরে কোন ক্ষতি করে না। রোজা শতকরা ৮০ ভাগ মানুষের পাকস্থলী এসিড কমে না। বরং কম বা বেশি থাকলে তার স্বাভাবিক হয়।বাড়তি ওজন হ্রাস করে। শতকরা 80 জনের ওজন হ্রাস পায়। এমন অসুখ যা রোজা রাখলে, বৃদ্ধি পায় বা মারাত্মক হয়ে পারে তাদের জোর করে রোজা রাখা উচিত নয় । রমজানে নামাজের জন্য, কুরআন তেলাওয়াত করার জন্য পাঁচ থেকে সাত বার ওযু করার কারণে মানুষের মুখ মন্ডলে নুরানী ভাব আসে শরীরেও মনে শান্তি অনুভূত হয়।

Comment Here